গুরু পূজা



গুরু পূজা

মন্ত্র সত্যং পূজাসত্যং সত্যম্ দেব নিরঞ্জনম্।
গুরুর্বাক্য সদাসত্যং সত্যমেব পরম্ পদম্।। ১

ভাবার্থঃ
গুরু প্রদত্ত মন্ত্র সত্য, পূজাও সত্য। দেবাদিদেব নিরঞ্জনও সত্য। গুরু বাক্য সদা সত্য, সেই পরমপদ সত্যের দ্বারা আস্তীর্ন।

গুরুর্ব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণু গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ
গুরুরেব পরমব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।। ২

ভাবার্থঃ
গুরুই সৃষ্টিকর্তা, গুরুই পালনকর্তা, গুরুই ধ্বংসকর্তা, গুরুই সেই পরমব্রহ্ম, আমি সেই পরমগুরুকে নমস্কার করি।

অখণ্ড মন্ডলাকারং ব্যপ্তং যেন চরাচরম্
তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।। ৩

ভাবার্থঃ
যার দ্বারা অখণ্ড মন্ডলাকার চরাচর জগৎ ব্যপ্ত হয়ে আছে, তাঁর স্বরূপ যিনি দর্শন করিয়েছেন সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার।

অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া।
চক্ষুরুন্মিলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।৪

ভাবার্থঃ
অজ্ঞতায় অন্ধ ব্যাষ্টির চক্ষু যিনি জ্ঞানাঞ্জন শলাকা দিয়ে উন্মীলিত করে দিয়েছেন, সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার করি।

স্থাবরং জঙ্গমং ব্যাপ্তং যৎকিঞ্চিৎ সচরাচরম্।
তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।।৫

ভাবার্থঃ
সপ্রাণ এবং অপ্রাণ সচল ও অচল সমস্ত বস্তুসমুহ যে ব্রহ্মের দ্বারা ব্যাপ্ত, তার স্বরূপ যিনি দর্শন করিয়েছেন সেই পরম গুরুকে নমস্কার করি।

চিদ্ রূপেন পরিব্যাপ্তং ত্রৈলোকং সচরাচরম্।
তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ৬

ভাবার্থঃ
চরাচর সহ ত্রিলোক জ্ঞান স্বরূপ (ব্রহ্মের) দ্বারা পরিব্যাপ্ত, তৎস্বরূপ যিনি দর্শন করিয়েছেন সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার করি।

সর্বশ্রুতি শিরোরত্ন সমুদ্ভাসিত মূর্তয়ে।
বেদান্তম্বুজ সূর্যায় তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ৭

ভাবার্থঃ
যাহার মূর্তি বেদান্তজ্ঞানের দ্বারা সমুদ্ভাসিত, যিনি বেদান্তরূপ পদ্মের উন্মেলক সূর্য স্বরূপ, সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার করি।

চৈতন্যং শাশ্বতং শান্তং ব্যোমাতীতং নিরঞ্জনং।
বিন্দুনাদকলাতীতং তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ৮

ভাবার্থঃ
যিনি শাশ্বত শান্ত ব্যোমাতীত ও নিরঞ্জন চৈতন্যস্বরূপ এবং যিনি বিন্দু, নাদ ও কলার অতীত, সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার করি।

অনেক জন্ম সংপ্রাপ্ত কর্মবন্ধ বিদাহিনে।
আত্মজ্ঞান প্রদানেন তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ৯

ভাবার্থঃ
যিনি আত্মজ্ঞান রূপ অগ্নিদান করে বহু জন্মে সঞ্চিত কর্মরূপ কাষ্ঠকে দহন করেন, সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার করি।

ন গুরোরধিকং তত্ত্বং ন গুরোরধিকং তপঃ।
তত্ত্বজ্ঞানং পরংনাস্তি তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ১০

ভাবার্থঃ
গুরুর অধিক তত্ত্ব নাই, গুরুর (সেবা) অধিক তপস্যা নাই, এবং যদ্বিষয়ক তত্ত্বজ্ঞান অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কিছুই নাই, সেই পরম গুরুকে নমস্কার করি।

মন্নাথঃ শ্রীজগন্নাথো মদ্ গুরুঃ শ্রীজগদগুরুঃ।
মদাত্মা সর্বভূতাত্মা তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ১১

ভাবার্থঃ
নাথই শ্রীজগন্নাথ, গুরুই শ্রীজগদ্ গুরু, আমার আত্মাই সর্বভূতের আত্মা, সেই শ্রী গুরুকে নমস্কার করি।

গুরুরাদিরনাদিশ্চ গুরুঃ পরম দৈবতম্।
গুরোঃপরতং নাস্তি তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ১২

ভাবার্থঃ
গুরুই কারণ এবং কারণহীন, গুরুই পরম দেবতা, গুরু অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কেহ নাই, সেই পরমগুরুকে নমস্কার করি।

ধ্যানমূলং গুরোর্ম্মূর্ত্তি পূজামূলং গুরোঃ পদম্।
মন্ত্রমূলং গুরোর্বাক্যং মোক্ষমূলং গুরো কৃপা।। ১৩

ভাবার্থঃ
একমাত্র গুরুমূর্ত্তির ধ্যানই মূল, গুরুর পদযুগল পূজাই সকল পূজার মূল।
গুরুর বাক্যই সকল পূজার মন্ত্র, গুরুদেবের কৃপাই মোক্ষপ্রাপ্তির মূল–একমাত্র গুরুদেবের কৃপাতেই মুক্তিলাভ হয়ে থাকে।

চিন্ময়ং ব্যাপিতং সর্ব্বং ত্রৈলোকং সচরাচরম্।
তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ১৪

ভাবার্থঃ
যিনি চিন্ময়রূপে অতি সুক্ষ্মরূপে ত্রিলোকে ব্যাপিয়া বর্তমান আছেন ও যিনি ব্রহ্মপদ দেখাচ্ছেন, অজ্ঞাননাশক সেই গুরুকে নমস্কার করি।

সংসার -বৃক্ষমারুঢ়াঃ পতন্তি নরকার্ণবে।
যেনোদ্ধৃত্মিদং বিশ্বং তস্মৈ শ্রী গুরবে নমঃ।। ১৫

ভাবার্থঃ
সংসাররূপ বৃক্ষে আরোহন পূর্ব্বক মায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে অজ্ঞানতাবশতঃ কতই না কুকর্ম করে ভয়ানক নরক সমুদ্রে পতিত হয়।
যিনি নরকে পতিত প্রানীকে জ্ঞান দান করে উদ্ধার করেন সেই ত্রাণকর্তা গুরুদেবকে নমস্কার করি।

ব্রহ্মানন্দং পরম সুখদং কেবলং জ্ঞান মূর্ত্তিং।
বিশ্বাতীতং গগনসদৃশং তত্ত্বমস্যাদি লক্ষ্যম্।। ১৬

ভাবার্থঃ যিনি ব্রহ্মানন্দস্বরূপ পরম সুখদ, নির্লিপ্ত, চিতিশক্তি রূপ জ্ঞানমূর্ত্তি বিশ্বাতীত গগনসদৃশ, তত্ত্বমসি প্রভৃতি বাক্যের লক্ষ্য, সেই পরম গুরুর বেদিমূলে আত্মসমর্পণ করলাম।

একং নিত্যং বিমলমচলং সর্বধীসাক্ষীভূতং।
ভাবাতীতং ত্রিগুণরহিতং সদগুরুং তং নমামি।। ১৭

ভাবার্থঃ
একং নিত্যং সেই অদ্বিতীয় ব্রহ্ম, বিমল, অচল, সকল বুদ্ধির সাক্ষী স্বরূপ, ভাবাতীত এবং ত্রিগুণ রহিত, সেই সদগুরুকে আমি নমস্কার করি।

শ্রীমৎপরং ব্রহ্ম গুরুং বদামি,
শ্রীমৎপরং ব্রহ্ম গুরুং ভজামি।
শ্রীমৎপরং ব্রহ্ম গুরুং স্মরামি,
শ্রীমৎ পরমব্রহ্ম গুরুং নমামি। ১৮

ভাবার্থঃ
শ্রীগুরু পরমব্রহ্মস্বরূপ, গুরুশব্দ সর্বদা মুখে বলি ও পরমব্রহ্মরূপ শ্রীগুরুদেবকে ভজনা করি।
পরমব্রহ্মস্বরূপ শ্রীগুরুদেবকে মনে মনে দিবা রাত্রি চিন্তা করি এবং পরমব্রহ্মস্বরূপ শ্রী গুরুদেবকে প্রণাম করি।

তব দ্রবং জগৎগুরো তুভ্যমেব সমর্পয়ে।

ভাবার্থঃ
হে জগতের গুরু আমার এই মন যা তোমারই জিনিস তোমারই পদমূলে সমর্পণ করলাম।

গুরু কৃপা হি কেবলম্।
ব্রহ্ম কৃপা হি কেবলম্।

ওঁম শান্তি ওঁম শান্তি ওঁম শান্তি

শ্রীশ্রী গুরু প্রণাম মন্ত্র (অর্থ সহ)


(দ্বি-প্রহর ও সন্ধ্যাবেলায়)
ওঁ অজ্ঞান-তিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন-শলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।। ১
মন্ত্রঃ সত্যং পূজা সত্যং সত্যং দেবো নিরঞ্জনঃ।
গুরোর্বাক্যং সদা সত্যং সত্যমেব পরং পদম্।।২
অখন্ড-মন্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্।
তত্পদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।৩
পিতৃমাতৃ-সুহৃদ্বন্ধু-বিদ্যা-তীর্থানি দেবতা।
ন তুল্যং গুরুণা শীঘ্রং স্পর্শয়েৎ পরমং পদম্।।৪
গুরুর্ব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণুঃ গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ।
গুরুরেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।৫
ধ্যানমূলং গুরোমূর্ত্তিঃ পূজামূলং গুরোঃ পদম্।
মন্ত্রমূলং গুরোর্বাক্যং মোক্ষমূলং গুরোঃ কৃপা।।৬
ব্রহ্মানন্দং পরম-সুখদং কেবলং জ্ঞানমূর্ত্তিম্।
দ্বন্দ্বাতীতং গগন-সদৃশং তত্ত্বমস্যাদি-লক্ষ্যম্।।
একং নিত্যং বিমলমচলং সর্ব্বদা সাক্ষিভূতম্।
ভাবাতীতং ত্রিগুণ-রহিতং সদ্গুরুং তং নমামি।।৭
ত্বমেব মাতা চ পিতা ত্বমেব।
ত্বমেব বন্ধুশ্চ সখা ত্বমেব।
ত্বমেব বিদ্যা দ্রবিণং ত্বমেব।
ত্বমেব সর্ব্বং মম দেবদেব।।৮
অর্থঃ
যিনি অজ্ঞান-অন্ধকারাচ্ছন্ন শিষ্যের চক্ষু জ্ঞানাঞ্জন-শলাকা দিয়া খুলিয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে ভক্তিভরে প্রণাম করি।১
মন্ত্র সত্য, পূজা সত্য, দেব নিরঞ্জনও সত্য; শ্রীগুরুদেবের বাক্যও সর্ব্বদা সত্য বলিয়া জানিবে এবং সেই পরমপদও সত্য।২
যাঁহার দ্বারা অখন্ড-মন্ডলাকার এই চরাচর বিশ্ব পরিব্যাপ্ত রহিয়াছে, তাঁহার শ্রীপাদপদ্ম যিনি দর্শন করাইয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে পুনঃ পুনঃ প্রণাম করি।৩
এই জগতে পিতামাতা, সুহৃৎ-বন্ধু, বিদ্যাবুদ্ধি, তীর্থসমূহ এবং দেবদেবী কেহই শ্রীগুরুদেবের সমতুল্য হইতে পারে না; যেহেতু শ্রীগুরুদেবই একমাত্র সেই পরম ব্রহ্মপদ শীঘ্র লাভ করাইয়া দিতে পারেন।৪
শ্রীগুরুদেবই ব্রহ্মা, গুরুই বিষ্ণু, গুরুই দেব মহেশ্বর, শ্রীগুরুই পরব্রহ্ম স্বরূপ; সেই শ্রীগুরুদেবকে পুনঃ পুনঃ ভক্তিভরে প্রণাম করি।৫
শ্রীগুরুমূর্ত্তিই সর্ব্বদা ধ্যান করা কর্ত্তব্য, শ্রীগুরুদেবের শ্রীপাদপদ্মই সর্ব্বদা পূজা করা উচিত, শ্রীগুরুদেবের বাক্যই মন্ত্র-স্বরূপ এবং শ্রীগুরুকৃপাই মুক্তি বা মোক্ষ লাভের একমাত্র উপায়।৬
যিনি ব্রহ্মানন্দ-স্বরূপ, পরম সুখদানকারী, নিলির্প্ত, জ্ঞান-মূর্ত্তি-স্বরূপ, যিনি সুখদুঃখাদি দ্বন্দ্বের অতীত, গগনসদৃশ উদার, ‘তত্ত্বমসি’ প্রভৃতি মহাবাক্যের লক্ষ্য-স্বরূপ, যিনি এক, নিত্য, বিমল, অচল, সর্ব্বদা সমস্ত কিছুর সাক্ষীস্বরূপ, ভাবাতীত ও ত্রিগুণাতীত, সেই পরব্রহ্মরূপী শ্রীশ্রীসদ্গুরুকে ঐকান্তিক ভক্তিভরে প্রণাম করি।৭
হে গুরুদেব, তুমিই আমার মাতা, তুমিই আমার পিতা, তুমিই বন্ধু, তুমিই সখা। তুমিই আমার বিদ্যাবুদ্ধি, তুমিই আমার ধনৈশ্বর্য্য সবই; শুধু তাহাই নয়, হে আমার প্রাণদেবতা, তুমিই আমার জীবনের যথাসর্বস্ব।৮
(এইভাবে শ্রীশ্রীসদ্গুরুর শ্রীচরণে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণই প্রণাম মন্ত্রের যথার্থ অর্থ)
সংগৃহীত- নিবেদনে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্কুল

শ্রী গুরু শক্তির অধিকার


শ্রী গুরু শক্তির অধিকার
গুরু পাদোদকং পেয়ং গুরোরুচ্ছিষ্ট ভোজনম ।
সদায় গুরু মূর্ত্তি ধ্যানং গুরু স্তোত্রং সদায় জপেৎ।॥
অর্থাৎঃ- গুরু শক্তির অধিকারী হইতে হলে শিষ্য সর্ব্বদা গুরুর চরনোদক পান গুরুর প্রসাদ ভোজন নিরন্তর গুরুর মুর্ত্তি ধ্যান এবং গুরু স্তোত্র ও মন্ত্রাদি জপ করিবেন।
তাই বলা হয়েছে ঃ-
চরনামৃত্য অধরামৃত্য ধরে মহাবলে।
পদধূলি এই তিন যদি সদা মিলে ।
চরনামৃত,  অধরামৃত্য  আর পদ ধূলি ।
এই তিন ভজনের মূল।
তাই আমাদের গুরু বন্ধনায় মহাজন সিদ্ধান্ত ঃ-
গুরুকে মনুষ্য জ্ঞান না করবে কখনো,
গুরু নিন্দা কভূ কর্ণে না করবে শ্রবণ ।
আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যেন আমরা কখনো কোন গুরু নিন্দুক লোকের সাথে চলাফেরা না করি । আমার গুরু, তোমার গুরু এমন বিভেদ নাই কোন গুরুদেবের নিন্দা শ্রবণ না করি ॥
*বৃন্দাবন ধামে কৃষ্ণ মানুষ রুপেতে ।
ব্রজবাসি গনে ভজন করিল যে মতে ॥
বিচার করিয়া শ্রীরুপ গোস্বামীগণ ।
গুরু মান্য করি করে শ্রী কৃষ্ণ ভজন ॥
বৃন্দাবনে ব্রজবাসিগণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে তারা মানুষ রুপেই পেয়েছিল যেমন শ্রীদাম, সুদাম, ধাম বলরাম সবাই ভগবানকে সখ্য প্রেমেই ভজন করিয়াছেন। তাই আমরা সাধারন মনূষ্য আমরা গুরুর আনূগত্য ছাড়া ভজনের যোগ্য দেহ নয়। চৈতন্য চরিতা মৃতে মহাপ্রভূ বলেছেনঃ-
সকল জগতে মোরে করে বিধি ভক্তি ।
বিধি ভক্তে ব্রজ ভাব পেতে নাহি শক্তি।

  • শুধু শাস্ত্রানুশাসনের ভয়ে যে ভক্তির অনুষ্ঠান তা বিধি ভক্তি এতে শ্রীকৃষ্ণ কে নিতান্ত আপনার জনজ্ঞানে সুখি করার জন্য প্রাণের টান থাকে না। সুতরাং ঐটি প্রেম ভক্তি নয়, এতে ব্রজ ভাব আসে না।
    বিবর্ত্ত বিলাসে বলা হয়েছেঃ-
    বেদ বিধির অগোচরে গোপি ভাব হয়।
    বেদাতিত নাহইলে কৃষ্ণ প্রাপ্তি নয়।্
    গোপি ভাবে কৃষ্ণ সেবা শাস্ত্রের বচন ।
    পুংসাচারে নাহি মিলে ব্রজেন্দ্র নন্দন।॥
    সুধীজন ব্রজেন্দ্র নন্দন কৃষ্ণ কে পেতে পুরুষ আকৃতিতে পাওয়া যায়না, বেদ বিধির উর্ধ্বে ভজন করতে হয়। আমাদেরও শিাগুরুর নিকট থেকে জানতে হবে। কারণ গ্রন্থে লিখিত আছেঃ-
    সাধনের তত্ত্ব যত শিা গুরু দিবে ।
    গোপি ভাব তব অঙ্গে প্রকাশ পাইবে॥
    তাই তিলে তিলে মনে পড়ে আমার গুরুদেব শ্রীশ্রীসুধীর রঞ্জন ব্রজ বাসির শ্রীচরনের অভাব বোধ করতেছি গুরুর ।
    আপনারা চৈতন্যগুরুর সন্ধান করুন। জয় নিতাই গৌর হরিবল।
    শ্রীশ্রী গৌরগণের পরিচয়ঃ-
    পঞ্চতত্ত্ব ছয় চক্রবর্ত্তী
    ১। শ্রীবাস    ২। গোকুলানন্দ         ৩। শ্যামদাস
    ৪  শ্রীদাস     ৫। গোবিন্দ         ৬।  রামচরন।
    অষ্ট কবিরাজ

১। রামচন্দ্র     ২। গোবিন্দ         ৩। কর্নপুর     ৪। নৃসিংহ
৫। ভগবান    ৬। বল্লভ দাস         ৭। গোকুল     ৮। গোপিরমন।
ছয় গোস্বামী
১ । রূপ (রূপ মঞ্জুরী)          ২ । সনাতন (লবঞ্চ মঞ্জুরী)
৩ । রঘুনাথ ভট্ট(রাস মঞ্জুরী)     ৪।  শ্রীজীব (বিলাস মঞ্জুরী)
৫।  গোপাল ভট্ট(গুন মঞ্জুরী)     ৬।  রঘুনাথ দাস(রতি মঞ্জুরী)।

স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ  শ্রীরাধার ভাব কান্তি সহ নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য রুপে অবতীর্ন হয়েছেন, ব্রজের প্রিয় গোপ-গোপি এবং দেবগন পার্ষদ রূপে অবীর্তন হইয়াছেন তাহাদের পরিচয়ঃ-
শ্রীগৌরাঙ্গ ————–শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধার মিলিত তনু
নিত্যানন্দ ————–বলরাম
অদৈত্য—————–মহাবিষ্ণু/সদাশিব
জগন্নাথ মিশ্র————-নন্দ
শচীদেবী—————–যশোদা
গদাধর ——————শ্রী রাধার ভাব ময় বিগ্রহ।
শ্রীবাস———-নারদ———সুন্দরানন্দ—-সুদাম———-
মুরারীগুপ্ত—হনুমান——অভিরাম———শ্রীদাম———–কেশব ভারতী-অত্র“র——ধনঞ্জয় পন্ডিত —————বসুধাম—- বাসুদেব সাব্বভৌম  বৃহস্পতি—–গৌরিদাস ———সুবল—–কৃষ্ণদাস কবিরাজ —–শুকদেব  শ্রীধর পন্ডিত ——মধুমঙ্গল—পুন্ডরীক বিদ্যানিধি—বৃষভানু —উদ্ধারন দত্ত সুবাহু নীলাম্বর চক্রবর্ত্তী—গর্গাচার্য্য–সদাশিব কবিরাজ—চন্দ্রাবলী
বৃন্দাবন দাস—বেদব্যাস—হরিদাস হচীক মুনির পুত্র ব্রহ্মা গঙ্গাদাস—-দুর্ব্বাসা   মুকুন্দদাস —বৃন্দাদেবী, ঘাড়াই পন্ডিত —বসুদেব   –লীদেবী—রুক্সিনী
গোপিনাথ আচার্য্য —-ব্রহ্মা —জগদানন্দ —সত্যভামা
পরমানন্দপুরী—উদ্ভব —সীতাদেবী —যোগমায়া
জগদ্বীস হিরন্য—যজ্ঞপতœী –—প্রতাপ রুদ্র–ইন্দ্রদ্যুম্ম
স্বরূপদামোদর—-ললিতা, রামানন্দরায় ——বিশাখা
শিবানন্দ সেন ——চিত্রা বা বীরাদুতী, বসু রামানন্দ —-চম্পকলতা
মাধবঘোষ——-তুঙ্গ বিদ্যা, গোবিন্দানন্দ ঠাকুর—-ইন্দ্ররেখা
গোবিন্দঘোষ—-রঙ্গদেবী, বাসুদেবঘোষ—সূদেবী

সূর্য প্রণাম, গোবিন্দ প্রণাম, তুলসী প্রণাম, গুরু প্রণাম, দুর্গা প্রণাম মন্ত্র ।


সকালে উঠে সূর্যকে প্রণাম করুন এই মন্ত্রে: . ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্। ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহষ্মি দিবাকরম্॥
.
গোবিন্দ প্রণাম মন্ত্র : ওম ব্রহ্মাণ্ড দেবায় গোব্রাহ্মণ হিতায় চঃ জগদ্ধিতায় শ্রীকৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমঃ॥
.
তুলসী প্রণাম মন্ত্র : বৃন্দায়ৈ তুলসী দৈব্যে প্রিয়াঐ কেশবস্য চঃ কৃষ্ণভক্তিপদে দেবী সত্যবত্যৈ নমঃ নমঃ॥
.
গুরু প্রণাম মন্ত্র : অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচারম্। তত্‍পদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ॥

দুর্গা প্রণাম মন্ত্র : সর্বমঙ্গল-মঙ্গল্যে শিবে সর্বথসাধিকে। শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণী নমোহস্তুতে॥
.
অশ্বত্থ বৃক্ষের মাঝে রয়েছেন স্বয়ং শ্রীবিষ্ণু। তাই বৃক্ষমূলে জল দিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করতে হয় : ওঁ অশ্বত্থ বৃক্ষরূপোহসি মহাদেবেতি বিশ্রুতঃ। বিষ্ণুরপধরোহসি ত্বং পুণ্যবৃক্ষ নমোহস্ত্ত তে॥
.
বিশ্বকর্মা প্রণাম মন্ত্র : দেবশিল্পিন্ মহাভাগ দেবানাং কার্যসাধক। বিশ্বকর্মন্নমস্তুভ্যং সর্বাভীষ্টফলপ্রদ॥